ঢাকা , সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফের রাজনীতিতে বাড়ছে উত্তাপ হলে রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার চায় বাম ছাত্রসংগঠনগুলো পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার ‘বাঘ’ আসতে বাধা কোথায় ১২৩ সংগঠন ১৬০৪ বার অবরোধ করেছে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চবিতে সংঘর্ষে আহত দেড় শতাধিক নুরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন রাষ্ট্রপতি বই মুদ্রণে আন্তর্জাতিক দরপত্রের সিদ্ধান্ত হয়নি ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ২ জনের জামিন মেলেনি ডাকসুতে ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট, শুনানি আগামীকাল নেত্রকোনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্যসহ নিহত ২ প্রথম রোবটিক রিহ্যাব সেন্টার চালু মোংলা-খুলনা মহাসড়ক এখন মৃত্যুফাঁদ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৪ হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৮ হত্যা-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ আমলেও এমন হামলা হয়নি, এর দায় সরকারকে নিতে হবে- উপদেষ্টা আসিফ মোবাইল ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস রেকর্ড ভেঙে পুঁজিবাজারে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন গাইবান্ধায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত অন্তত ১০ লাগাম ছিঁড়েছে হত্যা-চাঁদাবাজি রাস্তায় নামছে সাধারণ মানুষ র‌্যাবের ডিজি ও এসবি প্রধানের চাকরির মেয়াদ বাড়ল
* আগামী ত্রয়োদ্বশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাড়ছে উদ্বেগ * দেশের অর্থনীতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভাব পড়তে পারে * জুলাই সনদ ঝুলে যাওয়ার শঙ্কা * দ্রুত গতিতে বাড়ছে দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য

ফের রাজনীতিতে বাড়ছে উত্তাপ

  • আপলোড সময় : ০১-০৯-২০২৫ ০৫:১০:৪৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৯-২০২৫ ০৫:১০:৪৩ অপরাহ্ন
ফের রাজনীতিতে বাড়ছে উত্তাপ
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে নির্বাচনে অনিশ্চয়তা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর হঠাৎ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও দিন দিন বেড়েই চলেছে (অশনিসংকেত) উত্তাপ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে অস্থিরতা বাড়ার পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনও অশান্ত হয়ে উঠেছে। বুয়েট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরইমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা জারি করতে হয়েছে। এর আগে রাজনীতির অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে কাকরাইলে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অস্থিরতা সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে দেশের অর্থনীতিতে- যা এখনও আস্থাহীনতা ও বিনিয়োগে স্থবিরতার মধ্যে আটকে আছে। একজন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ প্রশ্ন তুলেছেন, রাজনীতির এই উত্তাপের মধ্যে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কে দেখবে? তাদের মতে, নুরের ওপর হামলা, জাপাকে ঘিরে নতুন সমীকরণ, জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং বিরোধী জোটগুলোর সঙ্গে আলোচনার অচলাবস্থা- সব মিলিয়ে রাজনীতির দাবা বোর্ডে নতুন হিসাব-নিকাশ চলছে। এ অবস্থায় অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা যেখানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ প্রত্যাশা করছেন, সেখানে সহিংসতা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যদি অব্যাহত থাকে, তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথ আরও কঠিন হয়ে উঠবে। অন্তর্বর্তী সরকারের এই এক বছরে অর্থনীতিতে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরলেও সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফেরেনি। ডলারের বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে এসেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে এবং ব্যাংক খাতে অনিয়ম দমনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবু বিনিয়োগ প্রবাহ কমে আসায় প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে, কর্মসংস্থান সংকুচিত হচ্ছে এবং দারিদ্র্যের বিস্তার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। চবিতে ফের সংঘর্ষ, প্রো-ভিসিসহ আহত ৩৫ শিক্ষার্থী: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২ নম্বর গেট এলাকায় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এতে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি, প্রক্টরসহ প্রায় ৩৫ শিক্ষার্থী। গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে এই সংঘর্ষ হয়। এসময় সেখানে প্রো ভিসি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। এরমধ্যেই দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে প্রোভিসি, প্রক্টরসহ আহত হয় প্রায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী। স্থানীয়দের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে অনেক শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়। তবে ঘটনাস্থলে দেখা মেলেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যর। এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত শনিবার রাত সোয়া ১১টায় দেরিতে ভবনে প্রবেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও রোববার দুপুর ১২টা থেকে আবারও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে টহল দিতে দেখা যায় স্থানীয়দের। খবর পেয়ে দল বেঁধে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে যায়। এতে মুখোমুখি অবস্থানে উত্তপ্ত হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। গত ২৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর কাকরাইলে জাপা ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং পরে সেনা-পুলিশের লাঠিপেটায় নুরসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনায় রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠকে বসছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা- এ ঘটনায় জাপাকে ঘিরে কোনও গোপন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে কিনা। বিশেষ করে জাপাকে বিরোধী দলের আসনে বসানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা নতুন করে জোরালো হচ্ছে। জুলাই সনদ ঝুলে যাওয়ার শঙ্কা: রাজনীতির উত্তাপে আরও যোগ হয়েছে বহু প্রত্যাশিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর অনিশ্চয়তা। দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা, নোট অব ডিসেন্ট এবং আইনি ভিত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সনদ ঘোষণা কঠিন হয়ে পড়ছে। ঐকমত্য না হওয়ায় রাজনৈতিক দূরত্ব বেড়েছে, যা রাস্তায় আন্দোলনে রূপ নিতে পারে। ফলে সনদ ঝুলে গেলে নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি আরও জটিল হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সনদ কার্যকর না হলে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে, যা অর্থনীতির জন্যও নেতিবাচক বার্তা বহন করবে। অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে: রাজনৈতিক অস্থিরতা যে অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে সংশয় নেই। ইতোমধ্যে বিনিয়োগ স্থবির, ব্যবসায়ীরা আস্থা পাচ্ছেন না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও কাঙ্ক্ষিত স্থিতি আসেনি। রফতানি আয় ও প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কিছুটা ইতিবাচক হলেও রাজনৈতিক ঝুঁকি সামনে রেখে নতুন বিনিয়োগে উদ্যোক্তারা পিছপা হচ্ছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা যত দীর্ঘায়িত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য তত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের আস্থায়ও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রফতানি প্রবাহ কিছুটা ইতিবাচক, তবু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখনও কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থনীতির মৌলিক সূচকগুলোতে উন্নতির আভাস আছে। কিন্তু রাজনৈতিক ঝুঁকি সব অর্জনকে ম্লান করে দিতে পারে। আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক ঋণদাতারা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না দেখলে সহায়তায় অনাগ্রহ দেখাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের প্রাণশক্তি হলো বিনিয়োগ। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসায়ীরা আস্থাহীন হওয়ায় নতুন প্রকল্প শুরু হচ্ছে না। এর ফলে চাকরির বাজার সংকুচিত হচ্ছে, কোথাও কোথাও ছাঁটাইও শুরু হয়েছে। শেয়ারবাজারেও এর প্রভাব পড়েছে অনেক কোম্পানি গত বছর লভ্যাংশ দিতে পারেনি। বাড়ছে দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য: পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ৩৮ শতাংশ শ্রমশক্তি আংশিক কর্মসংস্থানে যুক্ত, যাদের বলা হচ্ছে ‘আন্ডারএমপ্লয়েড’। অপরদিকে, ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি মজুরি বৃদ্ধিকে ছাপিয়ে গেছে। ফলে প্রকৃত আয় কমে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে চলতি বছর দেশে আরও ৩০ লাখ মানুষ ‘অতিদরিদ্র’ হবে। এতে অতিদারিদ্র্যের হার বেড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাবে। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে, যা গত দুই দশকে কোভিডকাল ছাড়া সর্বনিম্ন। প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থান ও আয়ের ওপর। টানা তিন বছর উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকার পর এ বছরের মাঝামাঝি থেকে কিছুটা কমেছে। জুলাইয়ে হার দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ, যা আগের মাসের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে এটি এখনও দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। চাল, সবজি ও ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। উল্টো বিনিয়োগ খরার মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসেছে। গত জুন শেষে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গত ২২ বছরের যে তথ্য রয়েছে, এ প্রবৃদ্ধি তার মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে একবার প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমেছিল। এর আগে করোনা অতিমারির মধ্যেও বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশের ওপরে ছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, এতে শিল্প খাতে আধুনিকীকরণ ও উৎপাদন সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হবে। দীর্ঘমেয়াদে এটি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা কমিয়ে দেবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাড়ছে উদ্বেগ-উদ্বকণ্ঠা: নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। কমিশন এটিকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছে। সরকারও বলেছে, নির্বাচন বিলম্বিত বা বানচাল করার যেকোনও প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে। কিন্তু মাঠের রাজনীতি বলছে, সংঘর্ষ ও পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে অনিশ্চয়তা কাটেনি। বিএনপি এই রোডম্যাপকে স্বাগত জানালেও জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এনসিপি ইতিবাচকভাবে নেয়নি। ফলে নির্বাচনের পথেও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিনিয়োগ চাঙা করতে হলে একটি ভালো নির্বাচন দরকার। বিনিয়োগকারীরা একটি স্থিতিশীল সরকারের নিশ্চয়তা চায়। তাই সরকার ঘোষিত কাক্সিক্ষত সময়ে একটি ভালো নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যত বাড়বে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা তত কমবে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও স্থায়ী স্থিতিশীলতা আসেনি। এই অবস্থায় যদি সহিংসতা বা অনিশ্চয়তা দীর্ঘায়িত হয়, তবে রপ্তানি, আমদানি, এমনকি ব্যাংকিং খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এক পরিচালক জানান, ব্যবসায়ীরা এখন বড় বিনিয়োগে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তিনি বলেন, আমরা মূলত অপেক্ষা করছি-রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। নির্বাচন নিয়ে সহিংসতা হলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে, শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হবে, আর বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার সরিয়ে নিতে পারে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিতে একধরনের স্থিতিশীলতা এলেও এটি নিম্নমুখী। বিনিয়োগে স্থবিরতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত না হলে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে না। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া বিনিয়োগের পরিবেশ ফিরবে না। ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে সাহস পাবেন কেবল তখনই, যখন নীতি ও নিয়মে ধারাবাহিকতা নিশ্চিত হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স